আমার তেমনই এক সম্পদ মঞ্জরী
Updated: Apr 5, 2021
শিক্ষক-জীবনের সবচেয়ে আনন্দঘন মুহূর্ত কি জানেন? যখন সন্তানসম ছাত্র বা ছাত্রীকে বুকে জড়য়ে ধরা যায় পরম আবেগে। এই মুহূর্তটির যে অনুভূতি তা শিক্ষক ছাড়া আর কারো পক্ষে অনুভব করা সম্ভব নয়। অজস্র অগণ্য আমার ছাত্রীদের মধ্যে এমনই কিছু ঝিকিমিকি তারার দল আছে, যাদের দেখলে ওই ছোট্ট বেলার ছড়াটা মনে পড়ে যায় ---
"twinkle twinkle little STAR
how, I wonder what U are! "
ওরা শুধু আমারই নয় দেশের সম্পদ। আমার তেমনই এক সম্পদ মঞ্জরী। ও আমাদের স্কুলে এসেছিল একাদশ শ্রেণিতে। ওইটুকু বয়সেই উজ্জ্বল ঝকঝকে ব্যক্তিত্ব, এক মুখ অমলিন হাসি, লম্বা দুটো বেণি। ভাল লেগে গিয়েছিল প্রথম দিন ক্লাসে ঢুকেই। কিন্তু প্রথম চমক লেগেছিল শিক্ষক -দিবসে ওর 'জন্মদিনে' কবিতাটা শুনে। দর্শকাশনে বসে থাকা মেয়েরা চুপ, আমরা দিদিমণিরা স্তব্ধ আর সবার চোখে অবিরল ধারা। এই মেয়ে যে ভবিষ্যতে কিছু একটা করবে, কিছু একটা হয়ে উঠবে, এটাই তো স্বাভাবিক। নিজের রুচির সাথে না পড়লে ও কোথাও compromise করে নি । তাই ব্যাংকের চাকরিও ছেড়েছে অনায়াসে। আজ মঞ্জরী শুধু একজন বাচিক শিল্পীই না,কবিতা ওর কাছে গবেষণার বিষয়বস্তু। কবিতার ছন্দ, অলঙ্কার, উপস্থাপনা, উচ্চারণ, শব্দকে সঠিকভাবে অর্থবহ করে তোলা, বিষয়বস্তু অনুযায়ী তার বক্তব্যর নাটকীয়তাকে যথাযথভাবে তুলে ধরা --- এই সব সবদিকে ওর মনোযোগ। আর সে সবই মঞ্জরী অতি যত্নে, পরম মমতায়, সুনিপুন সতর্কতায় চারিয়ে দিচ্ছে ওর শ্রুতিমঞ্জরীর ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে। আজ পর্যন্ত ওদের যেক'টি উপস্থাপনা শুনেছি, এককথায় তা অনবদ্য! বিষয়বস্তু নির্বাচনেও ওর ভাবনা প্রশংসার যোগ্য। বাংলা কবিতার অঙ্গন থেকে ও অসম্ভব মুন্সিয়ানার সঙ্গে মণি-মাণিক্য চয়ন করে। যার ফলে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই মঞ্জরী দেশ এবং সে গন্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও ছাত্র-ছাত্রীদের কবিতার পাঠ দিয়ে আপন প্রতিভার সাক্ষ্য রেখেছে। আমি অদিতিদি ওকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ভালবাসা জানিয়ে ওর উত্তরোত্তর শ্রীবৃদ্ধি কামনা করছি।
২/৪/২০২১
পাঞ্চজন্য
কোন্নগর
অনেক আদর আর ভালবাসা নিস।
অদিতিদি